সংসার চলে কাগজ কুড়িয়ে, ভিক্ষা করে! আগ্রার বস্তির শের আলির স্বপ্ন অগ্নিবীর হওয়ার

মহানগর বার্তা ওয়েবডেস্কঃ বাড়ি উত্তরপ্রদেশের আগ্রার এক বস্তিতে৷ পেশা ভিক্ষাবৃত্তি ও কাগজ কুড়ানি। বাড়ির আয়তন ৮ ফুট বাই ৮ ফুট। দশম শ্রেণীর এই ছাত্রটির নাম শের আলি। আগ্রার ওই বস্তির ৪০ টি পরিবারের এই বছর সতেরোর ছেলেটিই এখন আশার প্রদীপ।
কিন্তু শিরোনামে কেন??

সম্প্রতি, উত্তরপ্রদেশের দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় ৬৩ শতাংশ নিয়ে পাশ করেছে আলি। ইংরাজিতে ১০০-র মধ্যে পেয়েছে ৮০। আর তার পরেই স্রা ফেলে দিয়েছে গোটা বস্তি এলাকায়। আগ্রার ওই বস্তির একচিলতে ঘরে আট ভাইবোনের সংসারে বেড়ে উঠেছে আলি। ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। কোনও দিন খাবার জোটে, আবার কোনও দিন খালি পেটেই রাত কাটে।
আলির মধ্যে কিছু লক্ষণ এবং পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ চোখে পড়েছিল এক সমাজকর্মীর। নাম নরেশ পারসের। তিনিই আলিকে ওই পরিবেশ থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে স্কুলে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন।
আলি এক জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, যে বস্তিতে সে থাকে, সেখানে প্রতিটি পরিবারই কাগজ কুড়ানির কাজ করে। এমনকি শৈশব থেকে সেই কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তাদের কাছে পড়াশোনা যেন এক বিলাসিতা। কিন্তু সেই বেড়াজাল ছিঁড়ে পারসের হাত ধরে পড়াশোনার জগতে ঢুকে পড়ে আলি। স্বপ্ন অগ্নিবীর হয়ে দেশের সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করা।
আলির বাবা রঙ্গি আলি বলেন, “অনেক কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করেছে আমার ছেলে। আমাদের বস্তির সব বাচ্চার কাছে আলিই এখন অনুপ্রেরণা।” আলির মা শাহবিন বলেন, “খাওয়া জোটেনি কোনও কোনও দিন, কিন্তু আলি পড়াশোনা এক দিনের জন্য বাদ দেয়নি। কোনও কোনও দিন রাতে শুধু জল খেয়েই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। ওর চোখে অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন।”
শুধু পড়াশোনাই নয়, আলি অ্যাথলিটেও জেলা এবং রাজ্যস্তর থেকে অনেক পদত জিতেছে। ফলে ভবিষ্যতে এই আলি যে অনেকের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য।

