বাইক কেনার সামর্থ্য নেই, দু-চাকার সাইকেলে চেপেই কেদারনাথ দর্শন হাওড়ার অপুর

মহানগর বার্তা ওয়েবডেস্কঃ কথায় আছে বাঙালীর পায়ের তলায় সর্ষে। দীঘা-পুরী-দার্জিলিঙ প্রেমী বাঙালি মাঝেমধ্যেই ছক ভেঙে পারি দিয়েছে বহুদুরে। তাদেরই একজন হল, অপু মাঝি৷ বছর কুড়ির অপুর বাড়ি হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়। বাবা গোকুল মাঝি অটো চালক৷ ছোট থেকেই মামার বাড়িতে মানুষ৷ অভাব অনটন তার নিত্য সঙ্গী। ক্লাস ৬ এর পর আর এগোয়নি পড়াশোনা। কিন্তু তার মাঝেও স্বপ্ন দেখা ছারেননি। অপু। আর সেই স্বপ্ন এখন ঘোর বাস্তব।
সমবয়সী অনেক বন্ধুদের ইচ্ছে ‘Dreams to Kedarnath’। তাই আর পাঁচ জনের মত তারাও ঠিক করে ট্রেনে করে গন্তব্যে পৌছানোর৷ কিন্তু অপুর পক্ষে তা ছিল কার্যত অসম্ভব। কিন্ত থামার পাত্র নয় সে। অপু ও তার বন্ধু মিলে ঠিক করে দুইচাকায় চড়েই কেদার দর্শনে তারা বেরোবেন। না বাইক নয়, সাইকেল। তবে সে গুড়েও বালি। সাইকেল দুরপাল্লার উপযুক্ত করতে যা খরচা তাও তার আয়ত্তের বাইরে।

পাশে এসে দাঁড়ায় বন্ধু সৈকত কোরার। ঠিক হয় তার সাইকেল নিয়েই তীর্থ ভ্রমণে বের হবেন অপু। ঠিক সেইমতই চলতি বছরের গত ২৩শে মে মাত্র ১৫০০ টাকা এবং বন্ধুদের কিনে দেওয়া বেশ কিছু শুকনো খাবার নিয়েই রওনা দেন তিনি। প্রতিদিন গড়ে ১০০-১৩০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে গত ৮ই জন গন্তব্যে পৌছে যান অপু। তিনি জানিয়েছেন, যে যাত্রা মোটেও সহজ ছিল না। কখনো ধাবায়, কখনও কোনো বেঞ্চের উপর রাত কেটেছে। বিস্কুট শুকনো মুড়ি ছিল রাতের সম্বল। পথে অনেকেই তাকে সাহায্য করেছে। সকলের সাথে ছবি তুলেছেন তিনি। এর সাথে পেয়েছেন পাড়া প্রতিবেশীর উৎসাহ।
কিন্তু সবটা এতোটা সহজ ছিলনা৷ ফিরতি পথে দুইদিন সাইকেল চালানোর পরেই কাঠগুদাম রেল স্টেশনের কাছে অসুস্থ বোধ করেন তিনি। সেখান থেকে ট্রেনে মারফত চলে যান রাজস্থানে এক বন্ধুর কাছে। সেখানে নয় দিন থাকার পর স্বর্ণ ব্যাবসায়ীদের সহযোগীতায় বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। তাঁর এই ইচ্ছেপূরণে বেজায় খুশি অপু৷

