সাফল্যের শিখরে থেকেও মাটির ছেলে অরিজিৎ, ছোটোবেলার শিক্ষককে পা ছুঁয়ে প্রণাম গায়কের

মহানগর বার্তা ওয়েবডেস্ক: বর্তমানে স্বল্পখ্যাতদেরই মাটিতে পা পড়েনা। তবুও এই ধারার বাইরেও রয়েছেন বহু বিখ্যাত ব্যক্তি। সাধারণের ভাষায় যারা মাটির মানুষ। বিখ্যাত গায়ক অরিজিৎ সিংয়ের জন্যও বোধহয় এই অভীধাই প্রযোজ্য। বারবার তার নমুনা দেখা গেছে তাঁর চলনে-বলনে দৈনন্দিন যাপনে। সংগীত জগতে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেও তাঁর পা সর্বদা মাটিতেই। শিকড়ের টান ভোলেননি অরিজিৎ। সেই টান থেকেই বারবার ফিরে আসেন নিজের জন্মভিটে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে। নিজের মেয়েকে ভর্তি করেছেন জিয়াগঞ্জের এক সরকারী স্কুলে। বৃহস্পতিবার তাঁর প্রাক্তণ ইংরাজী শিক্ষিকার পায়ের কাছে বসে তিনি আশির্বাদ গ্রহণ করে অরিজিৎ প্রমাণ দিলেন তাঁর শিকড়ের প্রতি টান এখনও অমোঘ।
বৃহস্পতিবার আচমকা অরিজিৎ পৌঁছান তাঁর প্রাক্তণ স্কুল রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দরে। সেখানে তাঁর প্রাক্তণ ইংরাজী শিক্ষিকা সুনিতা লাহিড়ীর সঙ্গে তিনি দেখা করে তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন অরিজিৎ। সুনীতা দেবীও অরিজিৎকে আশির্বাদে ভরিয়ে দেন।

মাস দুয়েক আগে অরিজিৎ তাঁর এই প্রাক্তণ স্কুলেরই পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পান। স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বহু পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি। অরিজিতের নম্র-ভদ্র ব্যবহার বারবার আকৃষ্ট করেছে তাঁর গুনমুগ্ধদের।
সুনিতাদেবী বলেন, “ছাত্রজীবন থেকেই অরিজিতের স্বভাব, কথা বলার মিষ্টতা, সবার সঙ্গে মেশার মানসিকতা আমাদের মুগ্ধ করত। এখন সাফল্যের শীর্ষে থেকেও সে একটুও বদলায়নি।” অরিজিতের প্রাক্তন শিক্ষক তথা পরিবারের ঘনিষ্ঠ নির্মল মণ্ডল বলেন, “অরিজিৎকে আমরা কোনওদিনই আলাদা হতে দেখিনি। ওর মধ্যে এলিটভাব কোনওদিন প্রকাশ পায়নি। সে আজও মাটির সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে।” বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “অরিজিৎ সিং পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্কুল প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সবার সঙ্গে তার খোলামেলা ব্যবহার আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমরা চাই অরিজিতের হাত ধরে রাজা বিজয় সিং বিদ্যামন্দির খ্যাতির শিখর ছুঁয়ে ফেলুক।”
অরজিতের এই সহজ-সরল ব্যবহার তাঁকে মিশিয়ে দিয়েছে সাধারণের সঙ্গে। স্কুটিতে করে স্ত্রী’কে নিয়ে ভোট দিতে যাওয়া হোক বা নিজের সরকারকে এলাকার সরকারী স্কুলে ভর্তি করা সবক্ষেত্রেই অন্যান্য তারকাদের ভীড়ে পৃথক অরিজিৎ। আর এটাই তাঁর এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।

