সাচ্চা সমাজসেবী! মুখ ও বধির সন্তান দত্তক নিলেন আর্মি অফিসার

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: হয় পাক সেনাদের আক্রমণ নয় তো জঙ্গি সমস্যা, কাশ্মীর উপত্যকা অঞ্চলে অশান্তি লেগে থাকে সবসময়েই। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীর মানে কি শুধুই গোলাগুলি, রক্ত আর সন্ত্রাস? তা হয়তো নয়। আর তাই পৃথিবীর ভূস্বর্গ নামে পরিচিত কাশ্মীরের মাটি থেকেই উঠে এল ভালোবাসা, ভরসা আর স্নেহের গল্প।
কাশ্মীরে কর্মরত এক বিএসএফ অফিসার স্থানীয় এক মূক ও বধির বালকের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন, এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে। ঘটনাটি ঘটেছে কাশ্মীরের হান্ডোয়ারার কাছে চানজিমুলা গ্রামে। দিন রাত গোলাগুলির শব্দের মাঝে থেকেও মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার এই মহৎ দৃষ্টান্ত যে বহুদিন পর্যন্ত গ্রামবাসীদের মনে গাঁথা থাকবে, তা অনুমান করা যায় সহজেই।
জানা গেছে, ওই বিএসএফ অফিসারের নাম কমলেশ মানি। গত আগস্ট মাসে রোজকার মতো টহলদারি দিতে দিতে তাঁর চোখ পড়ে রাস্তার ধারে বসে থাকা এক বালকের দিকে। বালকের পরিচয় জানতে গিয়ে মানি বুঝতে পারেন যে সে কথা বলতে বা কানে শুনতে পায় না। গওহর মির নামের ওই বালকের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মানি জানিয়েছেন, “আমি ওর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। চকোলেটও দিয়েছিলাম। তারপর ওকে কখনো আমাদের ক্যাম্পে আসার কথা বলেছিলাম।”
বস্তুত কাশ্মীরের স্থানীয় বাচ্চারা আর্মি ক্যাম্পে সচরাচর যায় না। কিন্তু মেজর কমলেশ মানি এবং বাকিদেরকে অবাক করে ক্যাম্পে হাজির হয়েছিল গওহর মির। মানির কথায়, “ও সত্যি সত্যিই ক্যাম্পে চলে এসেছিল। কিন্তু আমি তখন সেখানে ছিলাম না। আমার সহকর্মীরা ওকে খাবার দিয়েছিল কিন্তু ও কিছু খায় নি। আমি না আসা পর্যন্ত ওখানেই ও অপেক্ষা করেছিল।” এমনকি কেউ টাকা দিতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে নিজের ব্যাগ খুলে গওহর স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে টাকার জন্য ও এখানে আসে নি।
এরপর মেজর মানি ক্যাম্পে ফিরলে তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়েছিল গওহর। এক ঝুড়ি আপেল সে তুলে দিয়েছিল মানির হাতে। এভাবেই গভীর বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার বন্ধন তৈরি হয়েছিল গওহর আর মানির মধ্যে। গওহরের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মানি জানতে পেরেছিলেন তাঁরা প্রায় সকলেই মূক ও বধির। এখন শুধু মাত্র গওহরের পড়াশোনার খরচই নয়, মানি তাকে কিনে দিয়েছেন নতুন স্মার্টফোনও।