একাধিক হাসপাতালে ঘুরেও মেলে নি জায়গা, খাস কলকাতায় বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারাল খুদে


মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: করোনা ভাইরাসের যে প্রভাব দৈনন্দিন জীবনের সাথে সাথে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাতেও, এর আগেও একাধিক বার তার নিদর্শন সামনে এসেছে। চিকিৎসায় গাফিলতি, অবহেলা কিংবা অনুন্নত পরিকাঠামোর জেরে নাকাল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। সেই ধারা বজায় রেখেই এবার সামনে এল আরো এক মর্মান্তিক নিদর্শন।
একাধিক হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে খাস কলকাতায় প্রাণ হারাল এক ৯ বছরের শিশু। জানা গেছে, পেটে ব্যথা নিয়ে একাধিক হাসপাতাল ঘুরে ছিল ওই শিশু। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল হন্যে হয়ে ঘুরে ছিলেন শিশুর বাবা মা। বাদ দেন নি নার্সিং হোম। কিন্তু রবিবার ছুটির দিন থাকায় তাঁদের ফিরিয়ে দেয় প্রায় সকলেই।
সারাদিন ঘুরে অবশেষে রাতের দিকে জায়গা মিলেছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। আজ সোমবার তার পেটে অস্ত্রপ্রচারের কথাও হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। অস্ত্রপ্রচারের আগেই মারা গেল ৯ বছরের বালক। ছেলের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাড়ির লোক। পেটে অসহ্য ব্যথা নিয়ে বালকটিকে চারটি নার্সিংহোম-হাসপাতালে তাঁরা নিয়ে গিয়েছিলেন বলেই জানান অভিভাবকরা। কিন্তু সব জায়গা থেকেই ফিরিয়ে দেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েক ঘণ্টা নষ্ট হয়ে যায় বলেই আফশোস তাদের। তাঁদের কথায়, “হাসপাতাল-নার্সিংহোম একটু চেষ্টা করলে বেঁচে যেত আমার ছেলে।”
জানা গেছে বালকের নাম শেখ তানবীর হোসেন। কিছুদিন আগে পেটে ব্যথা হওয়ায় প্রথমে হাজরার শিশু হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাকে দেখে ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ওষুধ খাওয়ার মাঝেই হঠাৎ গতকাল পেটে ব্যথা প্রচণ্ড বেড়ে যায় শিশুটির। যার পরই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে ছোটেন অভিভাবকরা।
বালকটির বাবার কথায়, ‘প্রথমে ভাঙড়ে নিউপিয়া, তারপর সিএমআরআই, বেলভিউ ও পার্ক ক্লিনিকে নিয়ে যাই ছেলেকে। কিন্তু কোনও জায়গাই ভর্তি নেয়নি। কোথাও ডাক্তার, কোথাও বেড না থাকার কথা জানানো হয়। শেষে এসএসকেএমে আসি। আজ অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সব শেষ। কালকে যদি ঘণ্টা পাঁচ-ছয় নষ্ট না হত, যদি ছেলেটা চিকিৎসা পেত, তাহলে হয়তো বাঁচানো যেত আমার ছেলেকে।’ এই ঘটনা যে ফের রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিল তা বলাই বাহুল্য।

