
নিজস্ব প্রতিবেদন: কিছুদিন আগেই পোষা কুকুরের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে তাকে গাড়ির সঙ্গে বেঁধে টেনে হিচড়ে নিয়ে গিয়েছিল এক ব্যক্তি, কুকুরের উপর এই নির্মম অত্যাচারের সাক্ষী থেকেছিল কেরালা। তার কয়েক দিন পরেই বাংলায় দেখা গেল সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি। কুকুরের সঙ্গে মানুষের দৃঢ় বন্ধনকেই আরো একবার নিজেদের মানবিকতায় ফুটিয়ে তুললেন বীরভূমের দম্পতি।
নিজেদের বিয়ে উপলক্ষ্যে বহুদিন ধরেই রাস্তার কুকুর আর দরিদ্র পথশিশুদের পেট ভরে খাওয়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন বিশ্বজিৎ ও ডালিয়া। সেই মতো ভাত কাপড়ের অনুষ্ঠানের দিন তাঁরা এলাকার বেশ কিছু পথ শিশুর মুখে তুলে দেন খাবার। পরে গোটা সিউড়ির প্রায় এক হাজার রাস্তার কুকুরকে মাংস ভাত খাওয়ান এই নবদম্পতি। বীরভূমের দম্পতির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।
বীরভূমের বিশ্বজিৎ আর ডালিয়া বহুদিন ধরেই সমাজসেবামূলক কাজ করে চলেছেন। তাঁরা ‘নির্বাকন্ন’ নামের একটি অলাভমূলক সংস্থার সাথে যুক্ত, যাঁদের কাজ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। বিশ্বজিৎ বাবুর কথায়, “আমাদের আক্ষেপ, করোনা বিধির কারণে আমরা ওদেরকে বিয়ের দিন এনে খাওয়াতে পারলাম না। আমাদের একটা NGO আছে, আমরা মানুষের সঙ্গে থাকি, মানুষকে ভালোবাসি। আর যাদের নিয়ে সারা বছর আমরা থাকি, তাদেরকে জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিনে বাদ দিয়ে দেব, তা হয় না।”
বস্তুত, তাঁদের বাড়িতে এই মুহূর্তে ৭টি রাস্তার কুকুর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডালিয়া। ওদের নিয়েই দিন কাটান তাঁরা।এছাড়া লকডাউনের সময়েও সিউড়ির কুকুরদের নিয়মিত খাইয়েছিলেন ওই দম্পতি। তবে শুধু কুকুরই নয়, পথ শিশুদের প্রতিও নিজেদের মমতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বীরভূমের বিশ্বজিৎ ডালিয়া।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিয়ে উপলক্ষ্যে মানুষের বদলে রাস্তার কুকুরদের খাওয়ানোর দৃষ্টান্ত এর আগে দেখা গিয়েছিল হরিয়ানায়। তবে পথ শিশু,যাদের মাথার উপর কেউ নেই, যারা সমাজের কাছ থেকে পায় অবহেলা,তাদেরকেও নিজেদের বিয়ের উৎসবে সামিল করে যে মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বীরভূমের দম্পতি, নিঃসন্দেহে তা অভূতপূর্ব।