লাভ জিহাদে গ্রেফতার! যোগী রাজ্য থেকে পালিয়ে বাঁচছেন ভিন্ন ধর্মী যুগলরা

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: ধর্মীয় ভেদাভেদের কারণে প্রেম ভেঙে যাওয়ার দৃষ্টান্ত নতুন নয়, সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালোবাসায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ান পরিবারের লোকজন। তবে এবার যেন ভিন্ন ছবি দেখছে দেশের মানুষ। এবার পৃথক ধর্ম বিশ্বাসের কারণে প্রেমে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে স্বয়ং সরকার।
বিবাহের নামে ধর্মান্তর বা লাভ জিহাদ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই দেশ জুড়ে দানা বেঁধেছে একাধিক বিতর্ক। বিভিন্ন রাজ্যে, বিশেষত বিজেপি শাসিত রাজ্য গুলিতে ইতিমধ্যেই এই ধর্মীয় প্রতারণা রুখতে কড়া আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে আইন মেনে শুরু হয়েছে গ্রেফতারিও।
জানা গেছে, ভিন্ন ধর্মে প্রেমের কারণে গ্রেফতারির আশঙ্কায় উত্তর প্রদেশ ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে যেতে শুরু করেছেন একাধিক প্রেমিক যুগল। জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো রকম সরকারি বাঁধা মানতে নারাজ তাঁরা। এমনই এক যুগল মহম্মদ শাদাব আর অনামিকা। চার বছর আগে কলেজে তাঁদের পরিচয় হয়েছিল। শাদাবের কথায়, “দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক কর্মীরা আমার প্রাণ নিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আমাকে ওদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে, এবং সম্পর্ক শেষ করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।” আইন আসার আগেই এই সমস্ত ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাদাব।
প্রাণের ভয়ে প্রাথমিক ভাবে তাঁদের কথা মেনে চললেও সম্পর্ক ভাঙেন নি শাদাব। কিন্তু উত্তর প্রদেশে অ্যান্টি কনভার্সন বা ধর্মান্তর বিরোধী আইন আসার পর রীতিমতো চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। “আমরা রাজ্যের বাইরে গিয়ে বিয়ে করব। যদি প্রয়োজন হয় আমি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতেও রাজি আছি। আদালতের কাছে আমরা সুরক্ষার দাবি জানাব”, বলেন মহম্মদ শাদাব।
প্রায় একই কাজ করেছেন শামিম আর সিমরানও। পরিবারের বাঁধাকে উপেক্ষা করেই বিয়ে করেছেন তাঁরা। তারপর দিল্লি হাইকোর্টে গিয়ে তাঁরা সুরক্ষার জন্য আবেদন করেছেন। উত্তর প্রদেশে আর ফিরবেন না বলেই জানিয়েছেন বছর একুশের সিমরান।
এ প্রসঙ্গে দিল্লির একটি এনজিও ‘ধানাক’-এর মালিক আশিক ইকবাল জানিয়েছেন, “চারপাশের গ্রেফতারি শুরু হওয়ায় তরুণ যুগলরা খুবই ভয় পেয়েছে।” বস্তুত গত কয়েকদিনে উত্তর প্রদেশ ছেড়ে অন্য রাজ্যে গিয়ে বিয়ে করার দৃষ্টান্ত দেখা গেছে প্রচুর। নতুন ধর্মান্তর বিরোধী আইন এবং তৎসংক্রান্ত প্রশাসনিক সক্রিয়তাই যে এক পিছনে মূল কারণ তা সহজেই বোঝা যায়। যদিও উত্তর প্রদেশে নতুন আইনে লিখিত ভাবে বলা রয়েছে, কোনো ব্যক্তিকে ধর্মান্তরের জন্য ‘জোর’ করা হলেই তা আইনবিরুদ্ধ।