‘প্রাণ গেলেও ধর্মের ক্ষতি নয়’, করোনা টিকায় গোরক্ত ব্যবহার প্রসঙ্গে বললেন হিন্দু স্বামী

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: প্রায় বছর খানেক আগে চিনের উহান প্রদেশে প্রথম দেখা মিলেছিল করোনা ভাইরাসের। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ব জুড়ে এই মারণ ভাইরাসের দাপট প্রাণ কেড়েছে বহু মানুষের। শুধু তাই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেই এলোমেলো করে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কারের চেষ্টায় নেমেছেন বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীরা, ভ্যাকসিন নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন অনেকেই।
কিন্তু এর মাঝেই ভ্যাকসিনের নির্মাণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কের সৃষ্টি করলেন হিন্দু মহাসভার স্বামী চক্রপানি। করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিনে গোরুর রক্ত ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। ফলে তাঁর দাবি, ভ্যাকসিন নির্মাণের প্রক্রিয়া বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে। শুধু তাই নয়, টিকাকরণ যাতে এদেশে না হয়, সেই আবেদনও জানিয়েছেন তিনি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দের কাছে।
এদিন ভারতে করোনা ভ্যাকসিনের টিকাকরণ বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছেন হিন্দু মহাসভার স্বামী চক্রপানি। তিনি আবেদনপত্রে জানিয়েছেন, গরুর রক্ত মেশানো আছে ভ্যাকসিনে। তাই তিনি দাবি জানিয়েছেন, কীভাবে ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে, তা জানাতে হবে। তারপরই টিকাকরণ শুরু হোক দেশে।
চিঠিতে চক্রপানি জানিয়েছেন, করোনা ভ্যাকসিন দ্রুত প্রয়োগ করা উচিত। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে কোনওভাবেই যেন ভ্যাকসিনের জন্য জনজীবন ব্যাহত না হয়। সেই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, “ভ্যাকসিন কী দিয়ে বানানো হয়েছে, তা জানা যাবে না কেন? আমরা জানতে পেরেছি, আমেরিকায় ভ্যাকসিন তৈরির জন্য গরুর রক্ত ব্যবহার করা হয়েছে।”
নিজের চিঠিতে দাবি সম্বন্ধে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্বামী চক্রপানি। তিনি বলেছেন, “সনাতন ধর্ম অনুযায়ী গরুকে আমরা মা মনে করি। আর মায়ের রক্ত পান করলে ধর্মকেই অবজ্ঞা করা হয়। আর ঠিক এই কারণে আমরা চাই, টিকাকরণ শুরুর আগে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। সব প্রশ্নের উত্তর পেলেই যেন টিকাকরণ শুরু হয়।” তবে শুধু আমেরিকায় তৈরি ভ্যাকসিন বলে নয়, যে কোনও দেশে তৈরি ভ্যাকসিনের তথ্যই জানাতে হবে, এমনটাই দাবি করেছেন চক্রপানি।
চক্রপানির কথায়, “প্রথমত, এটা নিশ্চিত হওয়া দরকার যে ভ্যাকসিনে গরুর রক্ত নেই। তারপর নিয়ম মেনে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হোক। প্রাণ চলেও গেলেও ধর্মের ক্ষতি হতে দেওয়া যায় না।” এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, আগামী বছর থেকেই ভারতে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে আশাবাদী কেন্দ্র। জানা গেছে, ভ্যাকসিন মিলবে জানুয়ারিতেই।