একরত্তি মেয়ের মুখেভাত, কফিনবন্দী হয়ে ঘরে ফিরছেন পাক গুলিতে শহীদ বাবা

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: ভারত পাকিস্তানের অবিরাম দ্বন্দ্ব আর তার জেরে সীমান্তে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ যে কত তাজা প্রাণ কেড়ে নেয়, কত স্বপ্ন থামিয়ে দেয় মাঝপথে, আরো একবার তার সাক্ষী থাকল কাশ্মীর উপত্যকা অঞ্চল। পাক সেনাদের অতর্কিত হামলায় মৃত্যু হল নদীয়ার বাঙালি জওয়ানের। সেই সঙ্গে থমকে গেল একরাশ স্বপ্নও।
শুক্রবার পাক সীমান্ত থেকে গোলাগুলির ফলে ফের রক্তাক্ত হয়েছে কাশ্মীর। বিএসএফ সূত্রের খবরে জানা গেছে পাক গুলিতে প্রাণ গেছে ৫ ভারতীয় সেনা, ৬ নাগরিকের।এর মধ্যেই আছেন নদিয়ার জওয়ান সুবোধ ঘোষ। আর কিছুদিন পরেই ছুটিতে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু গতকালই কাশ্মীর থেকে ফোন করে তাঁর বাড়িতে জানিয়ে দেওয়া হয় পাক হানায় তাঁর অকাল মৃত্যুর সংবাদ।
জানা গেছে নিহত সুবোধ ঘোষ নদীয়া জেলার তেহট্টের রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। পরের মাসেই ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর৷ ছুটির আবেদনও করে রেখেছিলেন৷ বাড়ি এসে মেয়ের মুখেভাতের আয়োজন করবেন নিজের হাতে, এমনটাই কথা ছিল৷ ডিসেম্বরে অন্নপ্রাশনের তারিখও ঠিক হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু সেই আয়োজন আর করা হল না৷ উপত্যকার বুকেই স্বপ্ন থেমে গেল বছর চব্বিশের সুবোধের।
গতকাল বিকেলে কাশ্মীর থেকে ফোন আসার পরে স্বামীর শহিদ হওয়ার খবর পেতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সুবোধের স্ত্রী৷ খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নামে রঘুনাথপুরে৷ জানা গেছে, ২০১৬ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন বিএসএফ কর্মী সুবোধ ঘোষ৷ ট্রেনিং শেষ হওয়ার পর তাঁর প্রথম পোস্টিং হয় পঞ্জাবে৷ পরে সেখান থেকে কাশ্মীরে বদলি হন তিনি৷ মাত্র এক বছর আগেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর৷ এই বছরই জন্মেছিল তাঁদের সন্তান৷ জুলাই মাসে ৪০ দিনের ছুটিতে বাড়িও এসেছিলেন সুবোধ।
বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয় সুবোধের৷ শোকে মুহ্যমান মা জানান, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতেও ছেলের সঙ্গে কথা বলেছি৷ ৯টার নাগাদ ফোন করেছিল ও৷ আমরা ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম৷ ডাক্তার কী বলল, তাও জানতে চায়৷ এদিন সকালে অনেকবার ফোন করেছিলাম৷ কিন্তু ফোন ধরেনি৷ রিং হয়ে কেটে যায়৷ পরে ফোনটা সুইচ অফ হয়ে যায়৷’’