সেবাই ধর্ম! বিনামূল্যে গরিবদের খাইয়ে যাচ্ছেন ডাক্তার, করছেন চিকিৎসাও

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: প্রায় বছর খানেক আগে চিনের উহান প্রদেশে প্রথম দেখা মিলেছিল করোনা ভাইরাসের। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ব জুড়ে এই মারণ ভাইরাসের দাপট প্রাণ কেড়েছে বহু মানুষের। শুধু তাই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেই এলোমেলো করে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। কিন্তু এই কঠিন সময়ের মধ্যেও যে মানুষের ব্যক্তিগত স্বার্থের উর্দ্ধে বেঁচে আছে মানবিকতা, তারই অন্যতম নজির রাজেশ ডাক্তার।
৩১ বছর আগে এক পথ দুর্ঘটনায় নিজের দাদাকে হারিয়েছিলেন হরিয়ানার ডাক্তার রাজেশ মেহেতা। সেই ধাক্কা যে গভীর দাগ কেটে গিয়েছিল তাঁর মনে এখনও পর্যন্ত তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁর রেশ। তার জেরে দুঃস্থ অস্বচ্ছল মানুষের সেবাকেই নিজের একমাত্র ব্রত করে তুলেছেন রাজেশ ডাক্তার।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, হরিয়ানার হিসার অঞ্চলে একাধিক হাসপাতালে গিয়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করেন রাজেশ মেহেতা। সম্পূর্ণ বিনা খরচে তাঁর কাছ থেকে চিকিৎসা করাতে পারেন মানুষ।
তবে এখানেই শেষ নয়, রাজেশ মেহেতার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নজির আছে আরো। বিনামূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি স্থানীয় দুঃস্থ শিশুদের জন্য তৈরি করেছেন একটি কমিউনিটি কিচেনও।সপ্তাহে একবার সেখান থেকে তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন খাবার দেন গরিবদের। বাচ্চাদের নানা প্রয়োজনীয় জিনিসও মেলে রাজেশ ডাক্তারের কাছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে তিনি বলেন, “আমার দাদা আমার আদর্শ ছিল। ১৯৮৯ সালে একটা অ্যাক্সিডেন্টে তিনি মারা যান। তখন থেকে আমার মনে হয়েছিল সমাজের জন্য কিছু করা দরকার। সব সময় আমরা নিজেদের জন্যেই কাজ করি।”
“তখন থেকেই আমি ও আমার বাড়ির লোক ঠিক করি গরিব বাচ্চারা যাতে দিনে একবার অন্তত ভালো করে খেতে পায়, সেই ব্যবস্থা করব। সাপ্তাহিক কমিউনিটি কিচেন খুলি আমরা”, বলেন তিনি। হিসারের সাই মন্দিরের দুঃস্থ শিশুদের বৃহস্পতিবার করে খাবার দেন বলে জানিয়েছেন রাজেশ মেহেতা।
১৯৯৪ সালে রাজেশ মেহেতার মা বাবা শ্রী সাই শক্তি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খুলেছিলেন। ৫ থেকে ১৫ বছর বয়সী ৪০০র বেশি বাচ্চা সেখান থেকে রোজ দুবেলা পেট ভরে খেতে পায়। এজাড়া আনুসাঙ্গিক নানা জিনিসও বাচ্চাদের দেওয়া হয় বলে জানা গেছে সূত্রের খবরে।