টাকা জমিয়ে গাড়ি-বাড়ি নয়, সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে কুকুরদের চিকিৎসা করেন এই মহিলা

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: একে তো অবলা, তার ওপর সযত্নে লালিত পোষ্য নয়। একেবারে রাস্তার কুকুর। ফলে না আছে রোজকার খাবারের নিশ্চয়তা, না আছে জীবনের। যখন তখন গাড়ির ধাক্কায় বেঘোরে প্রাণ গেলেও ফিরে তাকায় না কেউই। রাস্তার কুকুরদের এই অবহেলিত জীবনে যেন সাক্ষাৎ দেবদূত হায়দ্রাবাদের শৈলজা।
শৈলজা একজন আইটি প্রফেশনাল। নিজের রোজগার করা টাকা দিয়ে তিনি হায়দ্রাবাদের রাস্তায় ঘাটে ছড়িয়ে থাকা অভুক্ত কুকুরদের খাবার দেন। শুধু তাই নয়, ব্যবস্থা করেন চিকিৎসারও। সারাজীবন ধরে তিল তিল করে যে টাকা রোজগার করেছিলেন তিনি, সেই সমস্ত জমানো টাকা দিয়ে বাড়ি গাড়ি তৈরির কথা কখনো ভাবেননি শৈলজা। সবটাই এখন খরচ হচ্ছে অবলা কুকুরদের পিছনে।
অবশ্য বছর দুয়েক আগেও কিন্তু ব্যাপারটা এমন ছিল না। রীতিমতো রাস্তার কুকুরদের ভয় পেতেন শৈলজা। কীভাবে সেই ভয়কে জয় করলেন? শৈলজার কথায়, “২০১৮-র আগে আমি কুকুর ভয় পেতাম। ২০১৮-তে আমার বাড়ির লোক একটা বাচ্চা কুকুর বাড়িতে আনে, সেই থেকেই কুকুরের সঙ্গে একটা বন্ড তৈরি হয় আমার। আস্তে আস্তে আমার পাড়ার কুকুরদের আমি নিয়মিত খাবার দিতে শুরু করি। অন্তত ৫০টা কুকুরের খাবার আর চিকিৎসার খরচ দিতাম আমি।”
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে শৈলজা আরো বলেন, “এরপর আমি সদ্যোজাত কুকুর গুলোকে বাঁচিয়ে তাদের জন্য নতুন ঘর খোঁজার চেষ্টা করতাম। কাজটা সহজ নয়। ওদের পোষ্য হিসেবে নিতে চায় এমন বাড়ি খুঁজতাম আমি। ওদের পিছনে আমার প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে।” এখানেই শেষ নয়, রাস্তার কুকুরদের বংশবিস্তার রোধের জন্য উপযুক্ত ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থাও করে থাকেন শৈলজা।
কাজ সহজ নয় মোটেই।তবে নিজের লক্ষ্যের পথে থামতে চাননা শৈলজা। ভবিষ্যতে রাস্তার কুকুরদের জন্য একটা নিজস্ব সংস্থা নির্মানেরও পরিকল্পনা আছে তাঁর। তাঁর কথায়, “ওদের আবেগও ঠিক আমাদের মতোই। খুব বেশি তফাৎ নেই। তাই আমি সবাইকে অনুরোধ করবে যেন তাঁরা ওদের বোঝার চেষ্টা করেন। ওদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করেন।”