যেন স্বপ্নের গ্রাম! ঘরে ঘরে ইঞ্জিনিয়ার, আইআইটি হাতের মুঠোয় ভারতের এই গ্রামে

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: যেন স্বপ্নের গ্রাম। ভারতবর্ষের মধ্যেই একদিকে যখন নিরক্ষরতার হার ২২.৩% , অন্যদিকে তখনই খোঁজ মেলে বিহারের এক ছোট্ট গ্রামের যেখানে প্রায় প্রতিটি ঘরের ছেলেমেয়েই হয়ে উঠছে ইঞ্জিনিয়ার। নিজ নিজ জীবনে সাফল্য লাভ করে গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে প্রায় সকলেই।
গ্রামের নাম পাতোয়াতোলি। বিহারের গয়া জেলার অন্তর্গত এই ছোট্ট গ্রামে বসতি গড়েছে মেরে কেটে ১৫০০ পরিবার। আর তারই মধ্যে প্রায় প্রত্যেক ঘর থেকেই মোট ২৫০ জন ছেলে মেয়ে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। শুধু তাই নয়, কারিগরি বিদ্যার ক্ষেত্রে দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি বা আইআইটি-তে পড়াশোনা করার সুযোগও পেয়েছে তারা।
বিহারের এই পাতোয়াতোলি গ্রামের মানুষদের মূল জীবিকা হল বিছানার চাদর, গামছা ইত্যাদি তৈরি করা। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে কাপড় বোনার কারখানা। বাবা মা যখন জীবিকা উপার্জনের জন্য পরিশ্রম করেন, তখন ছেলে মেয়েরা বই খাতা নিয়ে মজে থাকে। আইআইটিতে পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ওঠাই ওদের একমাত্র স্বপ্ন। বলা বাহুল্য, সে স্বপ্ন পূরণও হয়। এখানকার প্রতিটি বাড়িতেই খোঁজ করলে অন্তত একজন আইআইটির ছাত্র বা ছাত্রী পাওয়া যাবেই।
কীভাবে সম্ভব হল এই প্রায় অসম্ভব ব্যাপার? জানা গেছে, পাতোয়াতোলি গ্রামের মানুষদের রোজগার বেশি নয় ঠিকই, কিন্তু প্রত্যেকেই ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে বদ্ধপরিকর। তাঁরা মনে করেন এটা তাঁদের ছেলে মেয়েদের অধিকার, মেধার জোরেই তারা মুখ উজ্জ্বল করবে সকলের। আর তাই কেউ লোন নিয়ে, কেউ একটু একটু করে জমানো টাকা দিয়ে যেভাবেই হোক ছেলে মেয়েদের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত কোচিংয়ের ব্যবস্থা করেন।
শুধু তাই নয়, পাতোয়াতোলির ছেলে মেয়েরা সকলেই মনে করে গ্রাম ছেড়ে বাইরে গিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা গুলিতে অংশগ্রহণ করে এবং সাফল্য অর্জন করেই একমাত্র দারিদ্র্য থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব। আইআইটি থেকে পাশ করে বেরোলে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা বেতন অবধারিত।
গুগলের তথ্য অনুযায়ী বিহারের নিরক্ষরতার হার প্রায় ২৯.১ শতাংশ। কিন্তু গয়া জেলার এই ছোট্ট গ্রামের দিকে তাকালে তা বোঝার উপায় নেই একেবারেই। নিষ্ঠা এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে আজও যে স্বপ্নপূরণ সম্ভব, তাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় পাতোয়াতোলি।