প্রয়াত ভারতীয় বায়ুসেনার প্রথম মহিলা অফিসার, শোকের ছায়া সেনা মহলে

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: চলে গেলেন বিজয়লক্ষ্মী রামানন, ভারতীয় বায়ুসেনার প্রথম মহিলা অফিসার। ৬৫ বছর আগে ১৯৫৫ সালে বায়ুসেনার যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেনা হাসপাতালের বিশিষ্ট স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞের পাশাপাশিই একজন দক্ষ উইং কম্যান্ডারও ছিলেন বিজয়লক্ষ্মী রামানন। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে নানা মহলে।
দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় মহিলাদের যোগদান যখন বিশেষ প্রচলিত ছিল না , সেই সময় তিনি একজন ডাক্তার, সেবিকা এবং কম্যান্ডার হয়ে বায়ুসেনায় নারী শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রবিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন সেই বিজয়লক্ষ্মী রামানন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
জানা যায়, বিজয়লক্ষ্মী রামাননের স্বামীও যুক্ত ছিলেন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গেই।তাঁর স্বামী কে বি রামানন ছিলেন বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার। ১৯৭১ সালে ক্যানসারে মৃত্যু হয় তাঁর।বিজয়লক্ষ্মীর মেয়ে সুকন্যা জানিয়েছেন, শেষ কয়েকটা বছর নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন বিজয়লক্ষ্মী। বয়সজনিত কারণেই নানা রোগ দেখা দেয়। মৃত্যুর দশদিন আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কম্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার পরে সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন বিজয়লক্ষ্মী। রবিবার রাতে ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ভারতীয় বায়ুসেনায় প্রথমবার নারী হিসেবে নিজের জায়গা সুপ্রতিষ্ঠিত করা এই বিজয়লক্ষ্মীর জন্ম ১৯২৪ সালে। ৩১ বছর বয়সে বায়ুসেনায় যোগ দেন তিনি। জানা যায়, অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন বিজয়লক্ষ্মী। ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের জন্য তাঁকে ‘বেস্ট স্টুডেন্ট’ অ্যাওয়ার্ডও দেওয়া হয়েছিল।মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছিলেন তিনি। এছাড়ামাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি থেকে সার্জারিতে পুরস্কারও পেয়েছিলেন বিজয়লক্ষ্মী।
যৌবনকাল থেকেই দেশের সেবাকে নিজের একমাত্র লক্ষ্য মনে করে এগিয়ে ছিলেন বিজয়লক্ষ্মী রামানন। ১৯৫৫ সালের ২২ অগস্ট বায়ুসেনায় যোগ দিয়েছিলেন। তারপর আর পিছন ফিরে তাকান নি কখনো। ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত বায়ুসেনার হাসপাতালগুলিতে বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছিলেন। এরপর বেঙ্গালুরুতে সেনা হাসপাতালে ফ্যামিলি উইংয়ের দায়িত্ব সামলাতে শুরু করেন বিজয়লক্ষ্মী।১৯৭১ সালে বায়ুসেনায় উইং কম্যান্ডারের পদ পান বিজয়লক্ষ্মী। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাঁর সেবার কোমল স্পর্শ চিরকাল স্মরণ করবে।