‘শাসকের বিরুদ্ধে বললেই কন্ঠরোধ’: অর্ণবের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে আরামবাগ টিভির সম্পাদক

অর্পন চক্রবর্তী: জনপ্রিয় সাংবাদিক এবং রিপাবলিক টিভির কর্ণধার অর্ণব গোস্বামীকে দুবছরের পুরোনো মামলায় আজ গ্রেফতার করেছে মুম্বাই পুলিশ। এই ঘটনায় আজ সকাল থেকেই তোলপাড় দেশের রাজনৈতিক এবং সাংবাদিক মহল। সরকারবিরোধী মত প্রকাশ করলে যে সংবাদমাধ্যমের উপর প্রশাসনের কোপ পড়ে, সেই মর্মেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুরু হয়েছে তরজা।
বস্তুত, মাস চারেক আগে ‘আরামবাগ টিভি’ নামক জনৈক সংবাদমাধ্যমের সম্পাদককেও একইভাবে পুলিশি গ্রেফতারের স্বীকার হতে হয়েছিল। এদিন অর্ণবের গ্রেফতারির ঘটনা আরামবাগ টিভির সম্পাদক সেফ সফিকুল ইসলামের সেই ঘটনার স্মৃতিকেই যেন উস্কে দিয়েছে। আরামবাগ টিভির ফেসবুক পেজ থেকে আজ সকালে একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, “আজ সকালের অর্ণব গোস্বামীর গ্রেফতার গত ২৯ জুন আরামবাগ টিভির এডিটর সেখ সফিকুল ইসলাম ও তাঁর পরিবার, রিপোর্টারকে গ্রেফতারির স্মৃতি যেন স্মরণ করিয়ে দিল।”
এ বিষয়ে সফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মহানগর বার্তার প্রতিনিধিকে তিনি জানান, গত ২৯ জুন তাঁর সঙ্গেও প্রায় একই ঘটনা ঘটে। “সেদিন প্রতিবেশীদের ফোনে আমার ঘুম ভাঙে। আমি দেখি পুলিশ আমার বাড়ি ঘিরে ফেলেছে।.. আমার মনে হয়েছে একই কায়দায় অর্ণব গোস্বামীকেও আটক করেছে পুলিশ।” তিনি আরো জানান, “আমার কাছে খবর অনুযায়ী, অর্ণব গোস্বামী নাকি বিদ্বেষমূলক খবর পরিবেশন করেছেন। কিন্তু যে কেসে অ্যারেস্ট করা হয়েছে তাতে তো সেসব কিছুই নেই। আমার ক্ষেত্রেও সেটা হয়েছিল।”
পুলিশি কার্যকলাপ নিয়ে সফিকুল ইসলামের আরো বক্তব্য, আমার খবরে যদি ভুল থাকে, সেই অনুযায়ী মামলা হোক, কিন্তু আমাকে ভুয়ো কেসে ফাঁসানো হবে কেন! অর্থাৎ যারা শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলবে তাদের মুখ চেপে ধরতে হবে। যদি সরাসরি তা না করা যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে হবে। আমাদের রাজ্যের ক্ষেত্রে যা দেখেছি, আজ মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও তাই দেখলাম।
পাশাপাশি নিজের ব্যাপারে তিনি এটাও বলেন যে,” আমার বিরুদ্ধে কেশগুলো খবর সংক্রান্ত হলেও তার কোন বাস্তব ভিত্তি ছিল না। সেই কারণে কলকাতা হাইকোর্ট গ্রেফতারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সে বিষয়ে পুলিশের ডিজি কে তদন্ত করতে বলেছে। তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা পড়বে। তার উপর বিচার চলবে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২৯শে জুন ভুয়ো মামলায় বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় আরামবাগ টিভির সম্পাদক সফিকুল ইসলাম তাঁর স্ত্রী এবং রিপোর্টারকে। প্রশাসনের বিরোধী খবর প্রচারের জন্যেই এহেন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয় আরামবাগ টিভির তরফে। সাত সপ্তাহ আটক থাকার পর আদালতে তাঁদের জামিন মঞ্জুর হয়। কিন্তু বাকিরা মুক্তি পেলেও ফের অন্য কেস চাপিয়ে আরো এক সপ্তাহ আটকে রাখা হয় সফিকুল ইসলামকে। আজ অর্ণব গোস্বামীর গ্রেফতারে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে কোথাও যেন মিলে গেল পশ্চিমবঙ্গ এবং মহারাষ্ট্র এমনটাই দাবি আরামবাগ টিভির সম্পাদকের।