স্যানিটাইজার গায়ে ঢেলে জীবন্ত পোড়ানো হল সাংবাদিককে, ফের উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশ

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতীয় শাসনব্যবস্থা, আর সেই গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হল সংবাদমাধ্যম। কিন্তু ২০২০ সালে দাঁড়িয়ে ভারতীয় গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ ঠিক কতটা স্বাধীন? আরো একবার সেই প্রশ্ন তুলে দিল উত্তর প্রদেশের ঘটনা।
উত্তর প্রদেশের বলরামপুরে এক সাংবাদিক এবং তাঁর বন্ধুকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারল এক দল দুষ্কৃতী। অপরাধ? স্থানীয় প্রসাশনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন তাঁরা। প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে। বাড়িতে ঢুকে ওই দুই ব্যক্তির গায়ে জীবন্ত অবস্থায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমনটাই জানা গেছে স্থানীয় পুলিশ সূত্রের খবরে। এই ঘটনা যোগী আদিত্যনাথ পরিচালিত উত্তর প্রদেশের সরকারকে যে আরো একবার একাধিক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল তা বলাই বাহুল্য।
জানা গেছে মৃত সাংবাদিকদের নাম রাকেশ সিং নির্ভীক। তিনি লক্ষ্ণৌয়ের এক সংবাদপত্র ‘রাষ্ট্রীয় স্বরূপ’-এর অফিসে কাজ করতেন। তাঁর বন্ধুর নাম পিন্টু সাহু। দুষ্কৃতীরা এদিন নির্ভীকের বাড়িতে ঢুকে তাঁদের গায়ে অ্যালকোহল মিশ্রিত স্যানিটাইজার ঢেলে দেয়। তারপর আগুন লাগিয়ে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেয় তাঁদের। পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করেছে বলে জানা গেছে সূত্রের খবরে।
ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পিন্টু সাহুর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাণ যায় নির্ভীকেরও। মৃত্যুর আগে ডাক্তারদের তিনি জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তিনি লেখালেখি করছিলেন। তার জেরেই তাঁদের উপর এই নৃশংস আক্রমণ করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
ঘটনায় অভিযুক্তদের নাম আক্রম, ললিত মিশ্র, এবং রিঙ্কু মিশ্র। তাঁদের প্রত্যেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে পুলিশ সূত্রের খবরে।
পুলিশ সূত্রে আরো জানানো হয়েছে, ওই সাংবাদিকের উপরেই টার্গেট ছিল দুষ্কৃতীদের। তাঁর বন্ধুকে তারা হত্যা করে শুধুমাত্র ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার অপরাধে। অর্থাৎ বিনা কারণে প্রাণ নিতেও হাত কাঁপে নি তাদের। বস্তুত সাংবাদিকের কাজ, অর্থাৎ সমাজের সত্যি সামনে আনার কাজ যে আদতে কতটা ভয়ঙ্কর বলরামপুরের ঘটনা আরো একবার প্রমাণ করল সেই কথাই।