
মহানগর বার্তা ওয়েবডেস্কঃ কাশ্মীরিরা এখন ভারতের চেয়ে বরং চিনের অধীনে থাকতে চান বলে মন্তব্য করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘নিজেকে ভারতীয় মনে করেন, কাশ্মীরে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা আমি সন্দিহান। কারণ তাঁরা আর ভারত সরকারকে বিশ্বাস করেন না।’ ন্যাশনাল কনফারেন্স পার্টির প্রধান ও চার দশক ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে ‘ভারতপন্থী’ হিসেবে পরিচিত ফারুক আবদুল্লাহ জানান, ভারত সরকার কাশ্মীরিদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো, দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকদের মতো আচরণ করছে।
তিনি এও বলেন, ‘আজকে চিন আমাদের সীমান্তের দিকে এগিয়ে আসছে। কাশ্মীরে এমন মানুষ আছে যারা চায় চিনারা আসুক।’ এ প্রসঙ্গে তিনি জোরালো কণ্ঠে বলেন, ‘কাশ্মীরিরা জানে চিন তাদের দেশে মুসলিমদের সঙ্গে কী করেছে। আমি সৎভাবেই এটা বলছি। তারা এমন কোনো সরকার চায় না যারা তাদের কথা শোনে না। তারা ভারতের চেয়ে বরং চিনকেই চায়।’ ৪৪ মিনিটের ওই সাক্ষাৎকারে ফারুক আবদুল্লা বলেন, ‘আমরা গান্ধীর ভারতের পক্ষে ছিলাম, মোদীর ভারতের না। আমাদের ধর্ম, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা হিসেবে আমাদের পাকিস্তানের সঙ্গেই যাওয়ার কথা। কিন্তু আমরা গান্ধীর ভারতে বিশ্বাসী ছিলাম। আমাদের বিশ্বাস ছিল, এই দেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার থাকবে। আমরা সবাই এই জাতির অংশ। এখন সেই অনুভূতি, সেই বিশ্বাস ভেঙে গেছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের অগাস্টে ভারতের সংবিধানে কাশ্মীরকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত এলাকার মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা বাতিল করে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। অথচ কাশ্মীরের সাংবিধানিক মর্যাদা পরিবর্তনের প্রায় ৭২ ঘণ্টা আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাক্ষাৎ করেন ফারুক আবদুল্লাহর সঙ্গে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে মোদীর সঙ্গে আলাপকালে আমি জানতে চেয়েছি চিন অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো যুদ্ধ চলছে কিনা। কাশ্মীরে এত সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে আমি জানতে চাই। যাতে আমরাও প্রস্তুতি নিতে পারি। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, নিরাপত্তাগত কারণেই সৈন্য বাড়ানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মোদী অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিয়ে একটি কথাও বলেননি। আমি বৈঠক থেকে এই বিশ্বাস নিয়ে বের হই যে অনুচ্ছেদ দুটি পরিবর্তন করা হচ্ছে না।’ প্রসঙ্গত, ৫ অগাস্ট ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির ঘোষণার পরই জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের বর্ষীয়ান নেতা ফারুকও। অবশেষে গত মার্চ মাসে তিনি মুক্তি পান।