পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়েই সৌমিত্র বাবুর শেষ যাত্রায় হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: দীপাবলির পর দিন সমস্ত আলো নিভিয়ে, বাংলার সমস্ত সিনেমাপ্রেমীদের কাঁদিয়ে চিরতরে বিদায় নিয়েছেন ফেলুদা। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকাহত চলচ্চিত্র জগত। কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। গতকাল তাঁর শেষ যাত্রায় সঙ্গী হয়েছিলেন টলিউড তারকা থেকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সকলেই। আর হাসপাতাল থেকে শ্মশান পর্যন্ত একটানা যিনি তাঁর পাশে ছিলেন, তিনি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গতকাল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মরদেহের সঙ্গে সঙ্গে বরাবরই হাঁটতে দেখা গেছে মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু অনেকেই হয়তো খেয়াল করেননি, তাঁর পায়ে ছিল ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধা। তা নিয়েই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অন্তিম যাত্রায় রবীন্দ্র সদন থেকে কেওড়াতলা মহাশ্মশান পর্যন্ত হেঁটেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পায়ে কি হয়েছে, তা জানেন না কেউই। এ নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় এদিন মুখ খুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের তরুণ সমর্থক দেবাংশু ভট্টাচার্যও।
সোমবার নিজের ফেসবুক পেজ থেকে “উনি হাঁটছেন” শীর্ষক একটি লেখা পোস্ট করেন দেবাংশু। তাতে তিনি লেখেন, “উনি ওনার শরীর নিয়ে কখনো অভিযোগ জানান নি। কাল এই পা নিয়ে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হেঁটে গিয়েছেন সৌমিত্র বাবুর শেষ যাত্রায়।” মুখ্যমন্ত্রী যে কখনো কোনো বাহানায় নিজের কর্তব্য থেকে সরে আসেন নি, সে কথাও জানান দেবাংশু ভট্টাচার্য। নিজের মায়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর তুলনা করে তাঁর বক্তব্য, “হাজার অভিযোগের চাপে এই মায়েরও নিজের শরীর নিয়ে কমপ্লেন করার সময়টাই নেই।”
বস্তুত, এদিন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষ যাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও সামিল হয়েছিলেন একাধিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। প্রিয় ‘অপু’কে অন্তিম বিদায় জানাতে এসেছিলেন অগুন্তি সাধারণ মানুষও। সৌমিত্র প্রয়াণে সমস্ত রাজনৈতিক রঙ যেন মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল গতকালের কলকাতায়।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই ফেলুদাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন বাম নেতারা। শোকযাত্রায় ছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, মনোজ ভট্টাচার্য। এছাড়াও ছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, তথ্যসংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, সাংসদ মালা রায়।ছিলেন চলচ্চিত্র জগতের কলাকুশলীরাও। সাধারণ মানুষ, রাজনীতি, সবকিছু যেন বিভেদ ভুলে এক হয়েছিলেন গতকাল।