
মহানগর বার্তা ওয়েবডেস্কঃ সম্প্রতি সামনে এসেছে মীরাটের সঞ্জু রানি বর্মার এই অত্যাশ্চর্য কাহিনী, যা নিঃসন্দেহে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সমাজের একাধিক মহলে। উত্তর প্রদেশের মীরাটের বাসিন্দা এই সঞ্জু রানি বর্মা। শোনা যায়, তিনি ২০১৩ সালে ২৮ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়েছিলেন। বিয়ে করে সংসার করতে না চেয়ে তিনি নিজের স্বপ্ন সফল করতে চেয়েছিলেন। আর সেই কারণেই বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। প্রায় ৭ বছর পর ঘরের মেয়ে আবার ফিরে এসেছে ছেড়ে যাওয়া ঘরে। কিন্তু তাঁর ৭ বছর আগের অবস্থানে বদল হয়েছে আমূল। এখন তিনি পিসিএস অফিসার।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করতে করতে সঞ্জু রানি বর্মা তাঁর মাকে হারান। এরপরই পরিবার ও আত্মীয় স্বজনেরা তাঁকে চাপ দিতে থাকেন বিয়ে করার জন্য। এমনকি পড়াশোনা ছেড়ে দিতেও জোর করা হয় তাঁকে। বহুবার বোঝানো সত্ত্বেও যখন তাঁরা কেউই তাঁর কথা শুনতে রাজি হননি, তখন সঞ্জু বোঝেন, তাঁর পড়াশোনার কোনো দাম নেই তাঁর পরিবার ও আত্মীয়দের কাছে। তিনি ঠিক করেন নিজের অধিকার তিনি লড়াই করে ছিনিয়ে নেবেন।
নিজস্ব অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী তাঁর অধরাই থেকে যায়। এমতাবস্থায় বাড়ি ছেড়ে দিয়ে তিনি ভাড়া বাড়িতে চলে যান, শুরু করেন প্রাইভেট টিউশন। নানা কাজের মাঝেই তিনি চালিয়ে যান পিসিএস পরীক্ষার প্রস্ততি। আজ দীর্ঘ সাত বছর পর সঞ্জু রানি বর্মা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ট্যাক্স অফিসার পদে নিযুক্ত হয়েছেন। গত সপ্তাহেই তাঁর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বস্তুত, ভারতবর্ষের মতো দেশে যেখানে আজও আদ্যপান্ত পুরুষতান্ত্রিকতার নিগড় বর্তমান, যেখানে বিয়ে করে সংসার করাতেই মেয়েদের জীবনের সমস্ত সার্থকতা খুঁজে পাওয়ার কথা ভাবা হয়, সেখানে দাঁড়িয়ে মীরাটের সঞ্জু রানি বর্মার মতো মেয়েরা আজও স্বপ্ন দেখতে বাধ্য করে। হাল না ছেড়ে দিয়ে লড়াই করে ন্যায্য জায়গা আদায় করে নিতে শেখায় আরো একবার।