‘রেলের স্টাফদের পেট আছে, গরিব মানুষদের পেট নেই?’, ট্রেন বিক্ষোভে উত্তাল চুঁচুড়া স্টেশন

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: রেল পরিষেবা চালু করার দাবিতে স্টেশনে স্টেশনে যাত্রীদের যে অসন্তোষ দেখা গিয়েছিল তা এখনও অব্যাহত। গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন রেল স্টেশনে যাত্রীদের বিক্ষোভ, অবরোধের ছবি উঠে এসেছে। হুগলি জেলার চুঁচুড়া স্টেশনে সোমবার ফের অবরোধে সামিল হয়েছেন যাত্রীরা। দাবি, রেলের যে পেট্রোলিং স্পেশাল ট্রেন চলছে তাতেই তাঁদের উঠতে দিতে হবে।
বস্তুত, পান্ডুয়া, বৈচি এবং হুগলি স্টেশনে এই একই দাবিতে গতকাল অর্থাৎ রবিবার সারাদিন বিক্ষোভ অবরোধ জারি ছিল। সোমবার সকাল প্রায় সাড়ে সাতটা থেকে চুঁচুড়া স্টেশনে পুনরায় শুরু হয় অবরোধ। পেট চালানোর জন্য রেলকর্মীবাহী ট্রেনেই তাঁরাও উঠবেন, দাবি এমনটাই। জানা গেছে, তাঁদের অবরোধের ফলে রেলকর্মীদের নিয়ে হাওড়াগামী একটি ডাউন গাড়ি চুঁচুড়া স্টেশনে আটকে পড়ে।
রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ পান্ডুয়ায় পৌঁছোয় রেলের একটি স্পেশাল পেট্রোলিং কার। এই ট্রেনটি মূলত রেলের কর্মী আধিকারিকদের জন্য। সাধারণ যাত্রী বহনকারী নয়। কিন্তু পেটের দায়ে এই ট্রেনেই উঠতে চান সাধারণ যাত্রীরাও। ফলে তাঁদের পুলিশ বাধা দেয়। গত দুদিন ধরে এই নিয়ে লিলুয়া ও হাওড়ায় রেল পুলিশের সঙ্গে যাত্রীদের অশান্তি চলছে। সোনারপুরেও একই অশান্তির খবর শোনা গেছে।যাত্রীদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগও করা হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এর মাঝেই চুঁচুড়ায় ফের শুরু হল যাত্রী বিক্ষোভ।
করোনা অতিমারীর আবহে গত মার্চ মাস থেকে যে লকডাউন শুরু হয়েছিল, তার জেরে এখনও বন্ধ লোকাল ট্রেন পরিষেবা। বলা বাহুল্য এর ফলে তীব্র সংকটের মধ্যে রয়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। আনলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা শুরু হলেও এখনও লোকাল ট্রেন চালু করা হয়নি। যাত্রীদের বক্তব্য, সব পরিষেবা আবার চালু করে দেওয়া হচ্ছে, তবে লোকাল ট্রেনে এখনও না কেন? তাঁদের দাবি, হয় সাধারণ ট্রেন চালু করতে হবে, নয়তো স্পেশাল পেট্রোলিং কারেই তাঁদের উঠতে দিতে হবে।
এদিন গুলসান নামে স্থানীয় এক মহিলা যাত্রীর কথায়, “রেলের স্টাফেদের পেট আছে, আমাদের পেট নেই? এভাবে চললে গরীব মানুষরা কী করবে?” এমতাবস্থায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে রেল পুলিশ। কিন্তু দিন দিন যেভাবে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে, তা নিঃসন্দেহে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনের কপালে।