
মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: একুশের বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, রাজনৈতিক বাদানুবাদে ততই উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলার পরিস্থিতি। একদিকে যেমন লোকসভা নির্বাচনের সাফল্যকে হাতিয়ার করে মসনদ দখলের লড়াইয়ে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি, অন্যদিকে তেমনই ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া তৃণমূলও। এমতাবস্থায় দলবদলের কালো মেঘে বিপর্যস্ত শাসকদলকে কোণঠাসা করতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরে।
এদিন বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উপলক্ষ্যে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর রাজ্যে বাঙালি আবেগকে কবজা করতে যে এখন গেরুয়া শিবিরের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে মেলে সেই ইঙ্গিতও। এদিন ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মনির্ভর ভারতের ভাবনা প্রথম চালু করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই। বিশ্বভারতীতে পৌষ মেলায় বহু শিল্পী তাঁদের শিল্পকর্ম বিক্রি করে স্বনির্ভরতার দিশা পান।
বস্তুত এবছর করোনা ভাইরাসের আবহে কোপ পড়েছে শান্তিনিকেতনের জনপ্রিয় পৌষ মেলায়। ভুবন ডাঙার মাঠ এবছর তাই ফাঁকা। এমতাবস্থায় বিশ্বভারতীর পডু়য়াদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান, ‘‘এই পৌষ মেলায় যে সব শিল্পী আসতেন, তাঁদের খুঁজে বের করে তাঁদের শিল্পকর্মকে অনলাইনে তুলে ধরার চেষ্টা করুন। বিক্রির জন্য তাঁদের উদ্বুদ্ধ করুন। প্রয়োজনে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যও নিন।’’
এদিন ভার্চুয়াল ভাষণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুজরাট যোগের প্রসঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কবিগুরুর দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর গুজরাতে থাকতেন বলে সেখানে মাঝেমধ্যেই যেতেন গুরুদেব। গুজরাতের সংস্কৃতি তাঁর ভাল লাগত। আমদাবাদে থাকাকালীনই দু’টি কাব্যগ্রন্থ লিখেছিলেন। ‘ক্ষুধিত পাষাণ’-এর কিছু অংশও সেখানেই লিখেছিলেন।’’ শুধু তাই নয়, ‘গুরুদেব’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বক্তব্য দিয়েই নিজের ভাষণে ইতি টানেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “গুরুদেবের কথা দিয়েই আমরা বক্তব্য শেষ করব, ওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল, খোল দ্বার খোল।”
এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য আধিকারিকরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুর দিকে যখন করোনা মহামারীর প্রকোপে বিপর্যস্ত হয়েছিল দেশের জনজীবন, তখন দেশ বাসীর উদ্দেশ্যে একটি বার্তায় প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার ডাক দিয়েছিলেন। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েই এগিয়ে যেতে হবে দেশের মানুষকে, জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন বিশ্বভারতীর একশো বছরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রসঙ্গ টেনে আরো একবার সে কথাই স্মরণ করালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।