
মহানগর বার্তা ওয়েবডেস্কঃ বাতাসে গন্ধ পুজোর। অথচ মহালয়াও হয়ে গেল একপ্রকার জৌলুসবিহীনভাবেই। এই প্রথমবার মহালয়ার প্রায় একমাসের বেশি সময় পর দুর্গাপুজো হবে। অন্য বছরের চেয়ে এ বছরটা একেবারেই আলাদা। কারণ করোনা আতঙ্ক আমাদের জীবনের সব আনন্দকে ছিনিয়ে নিয়েছে। তবে এই আবহেই কলকাতায় বেজে গিয়েছে পুজোর বাদ্যি। যদিও এ বছরের পুজোতে করোনাসুরকে বধ করতে থাকবে বহু বিধি–নিষেধ। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে বৈঠকে নয়া নিয়মাবলি নিজেই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বছর রাজ্যে ৩৭ হাজারের বেশি পুজো হচ্ছে বলে জানান খোদ মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন স্পষ্ট করে বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের জন্য জন সমাগম একেবারেই নয় তাই রেড রোডে পুজোর মূল আকর্ষণ কার্নিভালটা করতে পারব না, রেড রোডে নমাজও বাতিল করা হয়েছে।’ বিসর্জনেরও নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন মমতা। এমনকী পুলিসকেও করোনা নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
করোনা রুখতে খোলামেলা প্যান্ডেল করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনদিক বিশেষ করে প্যান্ডেলের উপরের অংশ খোলা রাখতে হবে। প্রবেশ এবং প্রস্থান সম্পূর্ণ আলাদা রাখতে হবে। কোনও ভাবেই যাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয় প্যান্ডেলের ভেতরে সেকারণে দাগ কেটে পুজোর লাইন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পুজো দেখতে হলে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার আবশ্যিক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজো উদ্যোক্তাদের মাস্ক এবং স্যানিটাইজার রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মাস্ক ছাড়া যাতে কেউ মণ্ডপে প্রবেশ না করে সেদিকে নজর রাখতে হবে। আধা কিলোমিটার আগে থেকে স্যানিটাইজ করতে হবে দর্শনার্থীদের। তার জন্য বাড়তি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। দুর্গাপুজোর পরে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায় তার জন্য পুজোর নিয়মও বেঁধে দিয়েছেন মমতা।
পুষ্পাঞ্জলির ক্ষেত্রে ২-৩ দফায় আয়োজন করতে বলা হয়েছে। বাড়ি থেকে ফুল বেলপাতা আনার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসাদ বিতরণের ক্ষেত্রেও দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। স্বেচ্ছাসেবকদের ফেস শিল্ড দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিঁদুর খেলাতেও সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা। ২-৩ বারে সিঁদুর খেলার আয়োজন করতে বলেছেন তিনি।
বিসর্জনের ক্ষেত্রেও নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন। একদিনে বিসর্জন করা যাবে না। আলাদা আলাদা দিনে বিসর্জন করতে হবে। তার তালিকা তৈরি করে দেবে পুলিস। একই সঙ্গে ঘাটগুলিতে পর্যাপ্ত আলো এবং স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পুজোর সময় ক্লাবগুলি অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করা হয়েছে।