গলায় মালা! বহু বিপদ থেকে মানুষকে বাঁচিয়ে অবসর নিলো রেল পুলিশের সঙ্গী ক্যালভিন

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘ ১০ বছরের কর্তব্যের শেষে অবশেষে চাকরি থেকে অবসর নিল ক্যালভিন। না, ক্যালভিন কোনো মানুষের নাম নয়, ক্যালভিন হল কুকুর। রেল পুলিশের স্নিফার ডগ। দুর্যোগ হোক বা মহামারী, বরাবরই রেল পুলিশের কর্মীদের একনিষ্ঠ সঙ্গী ছিল ক্যালভিন। তাঁর অবসরে তাই মন খারাপ পুলিশ কর্মীদের।
দশ বছরের চাকরিতে যাত্রী সুরক্ষার কর্তব্যে কখনো গাফিলতি করে নি ক্যালভিন। গন্ধ শুঁকে শুঁকে আততায়ী কিংবা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা ছিল ক্যালভিনের বাঁ হাতের কাজ। মূলত উত্তরবঙ্গেই ছিল কেলভিনের চাকরি। কোচবিহার কিংবা জলপাইগুড়ির স্টেশনে হামেশাই রেল কর্মীদের সঙ্গে দেখা যেত তাকে। শুধু তাই নয়, কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য গোটা কর্মজীবনে একের পর এক সম্মানের পালকও যুক্ত হয়েছে কেলভিনের মুকুটে।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে কোচবিহারের ডোডেয়ার হাট রেল ব্রিজ থেকে আইডি সনাক্ত করেছিল ক্যালভিন। এর জন্য পুরস্কারও পেয়েছিল সে। টানা ৯ বছর ৭ মাস চাকরি করার পর সেই কেলভিনই এবার চাকরি জীবন থেকে অবসর নিল। তাঁর গলায় মালা পড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে বিদায় দিলেন রেলের কর্মকর্তারা।
ক্যালভিন ল্যাব্রাডর প্রজাতির কুকুর। উত্তর পূর্ব রেলওয়ের আর্মিতে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সে। তার অবসরের পর জনৈক আর পি এফ জওয়ান অরুপ কুমার বনিক জানিয়েছেন, “পুরো আলিপুরদুয়ারে এমন কোনো স্টেশন নেই যেখানে ক্যালভিন ডিউটি করে নি। দশ বছর যার সাথে কাজ করেছি এবার তাকে ছেড়ে একা থাকতে হবে। আমাদের বেশির ভাগ সময়ই কাটে ওদের সঙ্গেই। ও একটা পরিবারেরই সদস্য।”
সূত্রের খবরে জানা গেছে মাত্র ৩ মাস বয়সেই রেল পুলিশের স্নিফার ডগ হিসেবে চাকরিতে যোগ দেয় ক্যালভিন। রেলের তরফ থেকেই তার এই নাম দেওয়া হয়েছিল। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর টানা ৮ মাস ধরে প্রশিক্ষণ চলে ক্যালভিনের। তারপর থেকেই শুরু হয় তার নিরলস একনিষ্ঠ কর্মজীবন। কাজের ক্ষেত্রে যেমন কেলভিনের নিষ্ঠা ছিল, তেমন শারিরীক ভাবেও ক্যালভিন ছিল দক্ষ।
রেল পুলিশের সমস্ত নিয়ম মেনেই এদিন সম্পন্ন হয়েছে ক্যালভিনের বিদায়ী অনুষ্ঠান বা ফেয়ারওয়েল। কুকুর হলেও এমন দক্ষ প্রাণোচ্ছল সঙ্গীকে ছেড়ে থাকতে মন চাইছে না কারোরই। এদিন উত্তরবঙ্গের রেল পুলিশের আস্তানায় তাই নেমেছে মন খারাপের হাওয়া।