
মহানগর বার্তা ওয়েবডেস্কঃ “সরকার যদি কোনও ভুল না করে থাকে তাহলে মিডিয়াকে কেন গ্রামে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা? অবিলম্বে মিডিয়াকে গ্রামে প্রবেশ করতে দেয়া উচিত, যাতে তারা আসল সত্যিটা সবার সামনে তুলে ধরতে পারে” বলে মন্তব্য করলেন শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। উত্তরপ্রদেশের যোগী প্রশাসন যেভাবে সংবাদমাধ্যমকে আটকানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে সেই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়েই সঞ্জয় রাউতের এই মন্তব্য।
তথাকথিত “ফেক নিউজ” এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ১০৫ টি এফআইআর দায়ের করেছে এবং নানান জায়গা থেকে ২৬ জনকে আটক করেছে। উত্তরপ্রদেশের তথ্য আধিকারিক শিশির সিং প্রায় হুমকির সুরে সংবাদমাধ্যমকে প্রতি মুহূর্তে মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন “ফেক নিউজ” এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে হাথরাস কাণ্ড নিয়ে “বেশি বাড়াবাড়ি” না করার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্র ও রাজ্যের এত প্রচেষ্টার পড়েও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নির্যাতিতার পরিবার তাদের বক্তব্য সংবাদমাধ্যমের কাছে পৌঁছে দিচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে যোগী প্রশাসন বুলা গড়হি গ্রামের নির্যাতিতার পরিবার সহ সমস্ত গ্রামবাসীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ।
সরকারি স্তর থেকে সংবাদমাধ্যমকে সর্বতোভাবে বাধা দান করার এরকম বিরল পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত আরো বলেন যে “মিডিয়াকে কেন আটকানো হচ্ছে তা আমার মাথায় ঢুকছেনা।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে যোগী প্রশাসন উঠে পড়ে লেগেছে হাথরাস গণধর্ষণকাণ্ডে তাদের গাফিলতি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য। এই কারণে তারা একের পর এক অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণে পিছপা হচ্ছেনা। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে সামনেই বিহার বিধানসভার ভোট। হাথরাস গণধর্ষণকাণ্ড এখনই থামানো না গেলে তার প্রভাব পড়শী রাজ্য বিহারের ভোটে পড়তে পারে বলে অনুমান। সেইসঙ্গে বিজেপির “পোস্টার বয়” যোগী দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নিজের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য হাথরাস কাণ্ডকে “প্রেস্টিজ ইস্যু” হিসাবে দেখছেন বলে তাদের অনুমান।
প্রসঙ্গত, আজকে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর হাথরাসে নির্যাতিতার পরিবারের সাথে দেখা করার অনুমতি পেল এবিপি নিউজ। ২৭ ঘন্টা কঠিন লড়াইয়ের পর তাদের ঢোকার অনুমতি দেওয়া হল। সেখানেই পরিবারের আর্তি স্পষ্ট ধরা দিল, অসহায় মায়ের কান্না শুনল সারা দেশ। পরিবারের একটাই হতাশা এখন শেষবারের জন্য দেখতে দেওয়া হলনা মেয়েকে, তাদের কথায় ” মেয়ের দেহ ফেরত দিন টাকাপয়সা চাইনা”।