
মহানগর বার্তা ওয়েবডেস্কঃ সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু হয়েছে আজ প্রায় ছয় মাস হতে চলল। গত ১৪ই জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে হলেও বড় পর্দার মহেন্দ্র সিং ধোনির এহেন আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে তুমুল। খুনের জল্পনা, রাজনীতি, বলিউড বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হয়ে চলে পরিস্থিতি।
তবে আর পাঁচটা বিতর্কের মতো কিছুদূর এগিয়েই খেই হারিয়ে ফেলে না সুশান্ত বিতর্ক। প্রায় ছমাস পড়েও মৃত অভিনেতার জন্য ভক্তদের আবেগের ধারা একই ভাবে বহমান।সৌজন্যে, অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া। শেষ কবে বিনোদন ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে এমন আবেগের বিস্ফোরণ দেখেছে বলিউড? প্রশ্ন ওঠে।
সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় চিপস কোম্পানির বিজ্ঞাপনে সুশান্ত বিরোধিতার আঁচ পেয়ে ফের ফুঁসে উঠেছে সুশান্ত অনুরাগী নেটিজেনরা। বিজ্ঞাপনটিতে মহাকাশ বিজ্ঞান, প্যারাডক্সিকাল ফোটন, অ্যালগরিদম এবং এলিয়েন্স বিষয়ক মন্তব্য ভালো চোখে দেখেননি তাঁরা। সুশান্ত সিং রাজপুত ছিলেন কোয়ান্টাম ফিজিক্সে বিশেষ ভাবে আগ্রহী। আর তাই রণবীর সিং অভিনীত ওই বিজ্ঞাপনে প্রিয় অভিনেতাকে বিদ্রুপ করা হয়েছে বলে মনে করেন নেট নাগরিকরা। তারপরই ওই চিপস কোম্পানি এবং রণবীর সিংকে বয়কটের দাবি ওঠে ট্যুইটারের দেওয়াল জুড়ে। সামান্যতম বিদ্রুপের আঁচেই জনতার এই প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে ছ-মাস কেন, সুশান্ত আবেগ আবছা হবে না এক বছরেও।
বস্তুত, সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই অভিনেতার জন্য সুবিচারের দাবিতে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। উঠেছিল সিবিআই তদন্তের দাবি। শুধু তাই নয়, অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই রুষ্ট হয় জনতা। সেই সঙ্গে মিডিয়ার একমুখী প্রচার জনমনে রিয়া বিরোধী যে বদ্ধমূল ধারণা তৈরি করেছিল, সাড়ে পাঁচ মাস বাদেও তা বদলায় নি এক চুলও। আদালতের দরবারে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও, আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি পেলেও প্রিয় অভিনেতার বান্ধবীকে জনতা ক্ষমা করে নি। তাদের কাছে আজও সুশান্তকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দেওয়ার নিষ্ঠুর কারিগর বলিউড, যার অন্যতম কান্ডারি রিয়া চক্রবর্তী।
বলিউডে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। দিব্যা ভারতী থেকে শ্রীদেবী, রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছে একাধিক তারকার। কিন্তু সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু যে জনমনে দীর্ঘস্থায়ী আবেগের জন্ম দিয়েছে, তা নজিরবিহীন। তরুণ অভিনেতার হঠাৎ মৃত্যুর আকস্মিকতাই কি এর একমাত্র কারণ? নাকি জীবনের কোনো না কোনো সময় ডিপ্রেশনের শিকার হওয়া সোশ্যাল মিডিয়ার তরুণ প্রজন্ম কোথাও গিয়ে সুশান্তের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেছে নিজেদেরও? উত্তর থাকবে অজানাই। আর এভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকবেন সকলের প্রিয় সুশান্ত।