

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক: একুশের বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, রাজনৈতিক বাদানুবাদে ততই উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলার পরিস্থিতি। একদিকে যেমন লোকসভা নির্বাচনের সাফল্যকে হাতিয়ার করে মসনদ দখলের লড়াইয়ে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি, অন্যদিকে তেমনই ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া তৃণমূলও। ভোটের আগে ঘোষিত হচ্ছে একের পর এক সরকারি প্রকল্প। তেমনি এক প্রকল্প নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে এবার বিতর্কে জড়ালেন এক তৃণমূল নেতা।
১লা ডিসেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে চালু হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষিত নতুন প্রকল্প ‘দুয়ারে সরকার’-এর কাজ। এছাড়া ভোটের মুখে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পকেও কার্যত সার্বজনীন করে দিয়েছে তৃণমূল। সরকারি এই প্রকল্পেরই এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করেছেন শাসক দলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। তাঁর দাবি, স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা নিলে ভোট দিতে হবে তৃণমূলকেই!
সোমবার ভাঙড়-২ ব্লকের চিলাতলা গ্রামে ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পের আয়োজন করে ব্লক প্রশাসন। সেই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন ভোগালি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মোদাসের হোসেন। তিনি বলেন “যাঁরা স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিচ্ছেন তাঁদের সকলকেই আমাদের দলের ছত্রছায়ায় থাকতে হবে। আমাদের দলকে ভোট দিতে হবে। “শুধু তাই নয়,এরপর তিনি বলেন, “অন্যের ছাতার তলায় গেলে তাঁদের কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হবে।” তাঁর এহেন মন্তব্য নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলেছে দলীয় নেতাদের।
মোদাসের হোসেনের এই বক্তৃতার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায়,পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আরাবুল ইসলাম প্রমুখ।আরাবুল ইসলামই এরপর কার্যত নামেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। তিনি স্পষ্ট বলেন, “সরকার সকলের জন্য স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দিচ্ছে। এর সাথে রাজনীতির কোন যোগ নেই।”
এদিকে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের এহেন মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলো। এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সিপিএমের জেলা সভাপতি শমীক লাহিড়ী বলেন, “স্বাস্থ্যসাথীর বিষয়টিই ভাঁওতা। উপরে মুখ্যমন্ত্রী ভাঁওতা দিচ্ছেন। আর নীচে এই সব প্রধানরা ভাঁওতাবাজি করছে। ঠিক সময় মানুষই উত্তর দেবেন।” অবশ্য মোদাসের হোসেনের মন্তব্যের নড়চড় হয় নি তাতে। নিজের অবস্থানেই অনড় তিনি। তাঁর কথায়,“দিদির দেওয়া এই কার্ড দেখিয়ে ৫ লাখ পর্যন্ত টাকা পাওয়া যাবে চিকিৎসার জন্য। তাই ভোট দেওয়ার সময় যেন এই কথা মাথায় থাকে।”

