‘অনুমতি নিয়েই ৯ জনকে খুন করা হয়েছে’ আজব দাবি করলেন খুনির আইনজীবী

মহানগরবার্তা ওয়েবডেস্ক:ট্যুইটারে যোগাযোগ করে অনুমতি নিয়েই মোট ন-জনকে খুন করেছেন, এমনই তাজ্জব দাবি করলেন জাপানের এক ব্যক্তি। টোকিও শহরের ওই সিরিয়াল কিলারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ট্যুইটার কিলার’। এদিন আদালতে ওই ব্যক্তির পক্ষে তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, অনুমতি নিয়েই খুন করার জন্য তাঁর শাস্তি লাঘব করা উচিত।
তাকাহিরো শিরাইশি নামের ২৯ বছর বয়সী ওই ট্যুইটার কিলারের বিরুদ্ধে মোট নটি খুনের অভিযোগ রয়েছে।জাপানের আদালতে তাঁর বিচার চলছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়টি হল, নিজের বিরুদ্ধে আসা সমস্ত অভিযোগই স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। অভিযোগগুলি প্রমাণিত হলে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করবে আদালত। জানা যাচ্ছে সেই চূড়ান্ত শাস্তি কিছুটা লাঘব করার জন্য মরিয়া হয়েছেন ব্যক্তির আইনজীবী।
তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল খুনগুলো করেছে ঠিকই, কিন্তু বাকি খুনিদের থেকে এই ঘটনা কিছুটা আলাদা। মোট নয় বারের কোনোবারই তিনি উদ্দিষ্ট ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া খুন করেন নি। প্রতিবারই মৃত্যুর আগে উদ্দিষ্ট ব্যক্তিরা তাঁকে বলেছিলেন, “আমাকে খুন করতে পারো।” শুধু তাই নয়, তাকাহিরোর আইনজীবীর আরো দাবি, যাঁরা ট্যুইটারে আত্মহত্যা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, বেছে বেছে তাকাহিরো তাদেরকেই খুন করেছেন। অর্থাৎ আত্মহত্যায় সাহায্য করেছেন মাত্র। সুতরাং তাঁর সাজা কিছুটা লঘু করা উচিত। এক্ষেত্রে ছয় মাস থেকে সাত বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, খুন করার পরে তাকাহিরো মৃতদেহগুলিকে টুকরো টুকরো করে ফেলতেন। সেগুলি কুল বক্সে ভরে রেখে দিতেন।আদালতে যখন তাঁর বিরুদ্ধে ন’টি খুনের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়, তখন তিনি প্রতিবাদ করেননি। উল্টে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য। আমি মোট ন’টি খুন করেছি। “তাকাহিরোর শিকারদের মধ্যে আছে ১৫ থেকে ২৬ বছর বয়সী ছেলেমেয়েরা। তিনি টুইটারে খুঁজে দেখতেন, কারা আত্মহত্যার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তাদের বলতেন, “আমি আপনাকে মরতে সাহায্য করব।” কাউকে বলতেন, “আমিও আপনার সঙ্গে আত্মহত্যা করতে চাই।”
কিন্তু জানা যায়, মাইনিচি শিমবুম নামে এক সংবাদপত্রের সাক্ষাৎকারে তাকাহিরো নিজে বলেছেন, “আমি কারও কাছে অনুমতি নিইনি। আমি যাদের খুন করেছি, তাদের প্রত্যেকের মাথার পিছন দিকে ক্ষতচিহ্ন ছিল। তারা যাতে কোনওরকম বাধা না দিতে পারে, সেজন্যই মাথার পিছন দিকে আঘাত করতাম। তা থেকেই প্রমাণিত হয়, আমি কারও অনুমতি নিয়ে খুন করিনি।”
প্রসঙ্গত, বছর তিনেক আগে ২৩ বছর বয়সী এক মহিলা ট্যুইটারে লেখেন, তিনি আত্মহত্যা করতে চান। তারপরে আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। টুইটারে খোঁজ করে সন্দেহজনক এক ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্ত করে তাকাহিরোর সন্ধান পায়। এরপর ২০১৭ সালে হ্যালোইনের রাতে পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে দেখে, ন’টি ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ ভরে রাখা হয়েছে কুল বক্সে।